এডিডাস,এ্যপল,টয়োটা,BMW,কোকাকোলা,পেপসি এর মত অনেক বিখ্যাত কোম্পানি বা ব্রান্ড গুলো আমরা প্রায়শই দেখতে পাই। আমরা নিজেই এমন বিখ্যাত ব্রান্ড গুলোর পণ্য ব্যবহার করি। কিন্তু কখনও ভাবিনা যে এইসব বিখ্যাত ব্রান্ডের লোগো গুলোর মেনিং কি?অথবা লগো গুলোতে কি মসেজ লুকানো আছে?
হ্যাঁ এই লোগো গুলোর প্রতিটি শব্দ,লাইন,শেফ এবং রং এর পেছনে কোন না কোন মেসেজ লুকানো থাকে।কোন কোম্পানি তাদের নাম শো করানোর জন্য লোগো বানান না। আর তাই আজ আমি পৃথিবীর বিখ্যাত ১৭ টি ব্রান্ডের লোগো তে লুকানো বা এর পেছনের ঘটনা গুলো নিম্নে বর্ণনা করেছি।
১৭ টি বিখ্যাত কোম্পানির লগােতে লুকিয়ে থাকা রহস্য
1.COCA-COLA
কোকাকোলার লোগোতে o এবং L লেটারের মাঝখানে খেয়াল করলে ড্যানিশ
পতাকা খুব পরিষ্কার ভাবে দেখতে পাবেন। কোকাকোলা এটা তাদের মার্কেটিং
ক্যম্পেইনের জন্য ব্যবহার করেছিলো।কারণ কোকাকোলা সর্বপ্রথম এই দেশ থেকে
তাদের ব্যবসা শুরু করেছিলো। কোলাকে মুলত ইংরেজিতে k দিয়ে লেখা গেলেও,
সৌন্দর্যের কথা মাথায় রেখে C দিয়ে লেখা হয়েছে।
2.AMAZON
এমাজন হচ্ছে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অনলাইন শপ। যেখানে নিত্য
দিনের ব্যবহারিত a থেকে z পর্যন্ত সকল পন্য পাওয়া যায়। খেয়াল করলে দেখতে
পাবেন এমাজনের লোগোতে a থেকে z পর্যন্ত তির চিহ্ন দেওয়া আছে তার মানে তারা
উপরে দেওয়া বিষয়টা বুঝিয়েছে।প্রথমে আমাজনের লোগো দেখলে মনে হয় এখানে
বিশেষ কিছুই নাই। কিন্তু এই লোগোটিও কোম্পানি ফিলোসোফিক্যাল মাইন্ড থেকে
বানানো হয়েছে। লোগোটির ওরেন্জ কালারের তীর চিহ্ন টি স্মাইল সিম্বোলাইজড
করে।কেননা কোম্পানি তাদের কাস্টমারদের যেকোন পর্যায়ে খুশি রাখতে চান
3.HUYNDAI
দক্ষিণ কোরিয়ার বিখ্যাত কার কোম্পানি
হুনডাই। অনেকে এই লোগোটিকে তাদের কোম্পানির নামের প্রথম অক্ষর H মনে করে কিন্তু এটা ভুল। আসলে
লোগোটিতে দুজন মানুষকে দেখানো হচ্ছে, একজন কাস্টমার আরেকজন কোম্পানির মিক প্রেজেন্টেটিব
4.APPLE
রোপ জেনফ বিখ্যাত কোম্পানি
এপলের লোগো ডিজাইন করেছিলেন।একটি ইন্টারভিউতে তিনি এই লোগোতে থাকা পেছনের কাহিনি বলেছিলেন।তিনি মার্কেট থেকে অনেক গুলো আপেল কিনে নিয়ে আসেন আর তিনি সেগুলোকে আলাদা আলাদা সেপে অঙ্কন করতে থাকেন। কিছু টুকরে করে কিছু অর্ধেক করে কিছু উল্টো করে।তারপর হঠাত তার ক্ষিদে অনুভব হয় এবং তিনি একটা আপেলে কামড় দেন।হঠাৎই তিনি খেয়াল করলেন কামড়ের ইংরেজি শব্দ Bite আর কম্পিউটারের ইস্পেসের সাউন্ড ও শুনতে কামড়ের আওয়াজের মত। আর তাতেই তিনি কামড় দেওয়া আপেলের ডিজাইন করে দেন।
5.ADIDAS
এই নাম কোম্পানির মালিকের নাম Abof Dassler থেকে নেওয়া হয়েছে। কোম্পানির লোগো বার বার পরিবর্তন করা হলেও এতে প্রতিবারই তিনটা স্ট্রাইক রাখা হয়েছে,তবে বর্তমান লোগোতে তিনটি ত্রিভুজ আকৃতির স্টাইক রাখা হয়েছে। উচু পর্বতের আকৃতি বোঝানো হয়েছে এই তিনটি স্ট্রাইক দিয়ে।এটি মুলত সেইসব চ্যালেন্জ কে বুঝানো হয়েছে,যে চ্যালেন্জ পূরণ করার জন্য খেলোয়াড়েরা দিনের পর দিন একটু একটু লরে এগিয়ে যান।
6.TOYOTA
টয়োটা জাপানের একটা কার প্রডিউসিং কোম্পানি। এবং বর্তমানের এরা পুরো পৃথিবীতে একটি জনপ্রিয় কার ব্রান্ড। অনেকে মনে করে এই কোম্পানির লোগোতে মাথায় ক্যাপ পরা কাউ বয়ের সাথে তুলনা করে।কিন্তু অসলে এই লোগোটি একটি সুই নির্দেশ করে যার পেছনের গর্ত দিয়ে সুতা ঢুকানো হয়েছে। মুলত এটা কোম্পানির অতীত সম্পর্কে ধারণা দেয়। কারণ কোম্পানিটি প্রথমে কাপড় বানানোর মেশিন এবং এর যন্ত্রপাতি তৈরি করতো।তাছাড়া লোগোটির আলাদা আলাদা অংশে বিন্যস্ত করলে কোম্পানি নাম হয়ে যায়।
7.PINTEREST
পিন্টারেস্ট হচ্ছে সারা পৃথিবীতে থাকা সব ধরনের ইমেজের গোডাউন। এখানে সারা পৃথিবীর মানুষের ব্যবহার করা সকল ইমেজ একত্রিত করা হয়।আর ব্যবহারকারিরা নিজের প্রয়োজনীয় এবং পছন্দের ইমেজটি অনলাইন বোর্ডে পিন করে রাখে। যাতে পরবর্তীতে খুব সহজে ইমেজটি প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করা যা। আর এই কারণেই লোগোর প্রথম অক্ষর P এর মধ্যে পিন লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
8.EVERNOTE
হাতির স্বরণশক্তি খুবই প্রখর হয়। এরা যেকোন ঘটনা এবং যে কোন মানুষের চেহেরা মনে রাখতে পারে।আর সে কারণে আমাদের প্রতিদিনের
নোটস সেভ করে রাখার এপ্লিকেশন টিতে হাতির মাথার ব্যবহার করা হয়েছে। এবং খেয়াল করলে দেখতে পাবেন এবং বুঝা যায় যে আমরা যেভাবে খাতায় বা বইতে প্রয়োজনীয় কেন পাতার কোনায় বেঙ্গে রাখি ঠিক তেমন করে এই লোগোর হাতির কান ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
9.LG
দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ইলেকট্রনিক কোম্পানি, যা বাংলাদেশ মুলত টেলিভিশন দিয়েই এর জনপ্রিয়তা কেড়েছে। তবে এই
LG পুরো পৃথিবীতে খুবই জনপ্রিয় একটা ব্রান্ড। আর এই লোগোটিতে খেয়াল করলে দেখতে পাবেন একজন মানুষের মুখের স্টেলাইজড ইমেজ।
10.BEATS
বিইট্স হচ্ছে হেডফোন তৈরী করার কোম্পানি। যার হেডফোন খুবই প্রপুলার এবং আপনেরা অনেকে এটা ব্যাবহার করে থাকবেন। এই কোম্পানির লোগোতে b দেওয়া আছে যেন দেখলে মনে হয় কেউ কানে হেডফোন দিয়ে আছে।তবে অনেকে মনে করে b মানে bass.
11.BMW
অনেকে বলে থাকে
bmw এর মাঝখানে থাকা অংশ এরোপ্লেনের সামনে ঘূর্ণন রত পাখার মত। কেননা এই কোম্পানির প্রথমে এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিন তৈরী করতো।কিন্তু আসলে এটি হচ্ছে বার্বারিয়ান পতাকা।বার্বারিয়ান হচ্ছে জার্মানির সেই জায়গা যে খান থেকে কোম্পানি প্রথম ব্যবসা শুরু করেছিলো।
12.TOBLERONE
টোবলারন হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় চকলেট কোম্পানি গুলোর মধ্যে একটি যার মেইন ব্রান্চ হচ্ছে সুইজারল্যান্ডের বার্ন শহরে। এর লোগোতে একটি বিয়ার বা সাদা ভাল্লুক লুকানো আছে। যা শুধু মাত্র ভালো করে তাকালেই বুঝা যায়। লোগোতে ভাল্লুকটি থাকার কারণ হচ্ছে বার্ন শহরে কে ,সিটি ওব বিয়ার বা ভাল্লুকের শহর বলা হয়।
13.CONTINENTAL
কন্টিনেন্টাল একটি বিখ্যাত টায়ার বানানোর কোম্পানির। এরা যে কোন ধরনের টায়ার বানিয়ে থাকে।এই কোম্পানির লোগোর প্রথম দুই অক্ষর মুলত গাড়ির চাকার আকার নির্দেশ করে।
14.FORMULA 1
ছবিতে খেয়াল করে দেখুন F এবং রেড কালারের মাঝখানে থাকা খালি স্পেস টুকু খেয়াল করেন তবে সেখানে ওয়ান দেখতে পাবেন। F এবং 1 এর সামনে থাকা চিহ্ন গুলো F1 কোম্পানির গাড়ির হাইস্পিড বুঝায়
15.BASKIN ROBNENS
বাস্কিন রেবেন্স পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত আইসক্রিম কোম্পানি। এই কোম্পানির লোগোর B এবং R এর পিংক কালার 31 শো করে।আর এটাই হচ্ছে কোম্পানিটির লোগোর এবং কোম্পানির লুকানো স্পেশাল একটা দিক। এখানে 31 রাখার কারণ হচ্ছে। তারা মোট ৩১ রকমের ফ্লেভারের আইসক্রিম তৈরী করে।
16.VAIO
vaio হচ্ছে একটি বিখ্যাত
ল্যাপটপ কোম্পানি। যার লোগোর প্রথম দুই অক্ষর একধরনের এনালগ ওয়েভের সেম্বলাইজড করে আর শেষ দুই অক্ষর ওয়ান এবং জিরে সেম্বলাইজড করে।কেননা সম্পূর্ণ কম্পিউটার
পোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজে শুধু মাত্র ওয়ান এবং জিরো ব্যবহার করা হয়
17.PEPSI
পেপসি সারা বিশ্বে পরিচিত একটা কোমল পানিয়। ১৮৯৮ সালে
Caleb Bradham এই পানিয় তৈরী করেন। তার নিজের বাড়িতেই এই পানীয় উৎপাদন করতেন। প্রথম দিকে ব্র্যাডসের পানীয় নামে বিক্রি হলেও পরে এর জনপ্রিয়তার জন্য নামটি পেপসি কোলাতে পরিবর্তিত করা হয়।এর দুইটি প্রধান উপাদান পেপসি ( একটি পাচক এনজাইম) এবং কোলা - এক প্রকার বাদাম।
দ্রুতই এই পানিয় জনপ্রিয়তা অর্জন করা শুরু করলো এবং কোম্পানির মালিক ক্রেতার চাহিদা মেটানোর জন্য তার বাড়ির বাহিরে একটি গুদামে কারখানা স্থানান্তরিত করেন। প্রথমে নিছের এই
Logo টি দিয়ে কার্যক্রম শুরু করলেও পরবর্তীতে বহু বার এর ডিজাইন পরিবর্তন করা হয়েছে।প্রথম লোগোটি বানানো হয়েছে ১৯৯৮ সালে। এরপর ১৯০৫, ১৯০৬ পুনঃ পুনঃ ডিজাইন পরিবর্তন হলেও ১৯৪০ সালে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রদর্শন করতে এই লোগোতে লালা,সাদা, এবং নীল রঙের আইকন চালু করেছিলো। তারপর একই নিয়ম ফলো করে ১৯৭৩,১৯৯০ সাল পর্যন্ত এমন ভাবে বিভিন্ন রং এর সাথে লোগোটি পরিবর্তন করলেও ২০০৩ পুরো কনসেপ্ট থেকে বেরিয়ে বর্তমান লোগোটি বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি আর্কষণের জন্য নিবন্ধ করেন।
লেখাটা পড়ে যদি কিছু অন্তত জানতে পারেন তাতেই আমাদের পাওয়া । এবং যদি মনে করেন এটা অন্যদের জানানো দরকার তবে শেয়ার করুন আপনার ফেবু টাইমলাইনে।
ধন্যবাদ।
আরও পড়ুন
বিশ্বমানের দশটি বাংলা মুভি যা জিবনে একবার হলেও আপনার দেখা উচিত
4 মন্তব্যসমূহ
Thanks to how what why ... I think we know more with this
উত্তরমুছুনWe appreciate for your support. Stay with us. We will try our best
মুছুনOnek kicu jante parlam thanks
উত্তরমুছুনThanks... Samne emon aro onek kecu nea post korbo . Hope you will be with us
মুছুন